লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

প্রিয় পাঠক আপনি কি লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার সম্পর্কে খোঁজাখুঁজি করছেন বা জানতে চাচ্ছেন ? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আপনি আজকের আর্টিকেলের ভিতরে জানতে পারবেন লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার সম্পর্কিত যাবতীয় সকল তথ্য।

লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

সেই সেই সাথে আরো জানতে পারবেন লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগ কিভাবে ছড়ায় এবং ওর ক্ষতিকর দিকগুলো কি কি ইত্যাদি সকল তথ্য সম্পর্কে।

পোস্ট সূচীপত্র ঃ লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

  • ভূমিকা
  • লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগ কি
  • লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ 
  • লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগ কিভাবে ছড়ায়
  • লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের প্রতিকার
  • লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের চিকিৎসা
  • লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের পরামর্শ
  • শেষ কথা

ভূমিকা

প্রিয় পাঠক আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় হলো বা আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলের ভিতর আলোচনা করতে চলেছি লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার ও কিভাবে ছড়ায় চিকিৎসা কি রোগের এ রোগের পরামর্শ কি ইত্যাদি সকল তথ্য সম্পর্কে।

আপনি যদি আজকে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়েন তাহলে আপনি লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পারবেন এবং এই রোগ হলে তার প্রতিকার ও চিকিৎসা করতে পারবেন।

লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগ কি

লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগ এক ধরনের ভাইরাস ধারা সংগঠিত চর্ম রোগ যা গবাদি পশুর শরীরে হয়ে থাকে। এটি মানুষের শরীরে হয় না এটি শুধুমাত্র গবাদি পশুর মধ্যে হয়ে থাকে। লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাস দ্বারা এ রোগটি সৃষ্টি হয়ে থাকে এবং গবাদি পশুর এ রোগ হয়ে থাকে।
সর্বপ্রথম এ রোগটি দেখা যায় ১৯২৯ সালে আফ্রিকায় এবং বর্তমানে এ রোগটি গবাদি পশুর মধ্যে খুবই পরিমাণ হয়ে থাকে। আমাদের বাংলাদেশের সর্বপ্রথম এর এ রোগটি ২০১৯ সালে সর্ব প্রথম সনাক্ত করা হয় আর বর্তমানে তা প্রত্যেক অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।

লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ 

লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগ হলে গবাদি পশুর ভিতর অনেক কিছু লক্ষণ করা যায় যার ফলে সনাক্ত করা যায় যে এটি লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগে আক্রান্ত। তাহলে চলুন জেনে নেই লাম্পি ডিজিজ রোগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে ঃ

  • এ রোগে আক্রান্ত হলে গবাদি পশুর জ্বর ১০৪ থেকে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • এ রোগে আক্রান্ত হলে গবাদি প্রাণী খাবার রুচির পরিমাণ কমে যায়।
  • এ রোগটি হলে গবাদি পশুর শরীরে বিভিন্ন স্থানে ফোটা ফোটা বা গোলাকার ফোসকা দেখা যায়।
  • গবাদী প্রাণী শরীরের নিম্নে অংশে পানি জমে এবং পা ফুলে যায় এবং বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়।
  • এ রোগ হলে গবাদিপশু সঠিক মত হাঁটাফেরা করতে পারে না খরিয়া হাটে।
  • কিছু সময় পড়ে ত্বক এর সমস্যাগুলো ক্ষততে রূপান্তরিত হয়।
উপরে লিখিত লক্ষণ গুলো হচ্ছে লামপি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ। কোন গবেতে প্রাণীর উপরে এরোগ হয়ে থাকে তাহলে উপরে উল্লেখিত লক্ষণ গুলো ওই গবাদি প্রাণীর উপরে দেখা যায়। উপরে উল্লেখিত লক্ষণগুলো দ্বারা সনাক্ত করা যায় এ ভাইরাস দ্বারা সংঘটিত রোগটিকে।

লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগ কিভাবে ছড়ায়

স্কিন ডিজিজ রোগটি হচ্ছে ভাইরাস দ্বারা সংঘটিত একটি রোগ। সুতরাং এটি হচ্ছে একটি ছোঁয়াচে টাইপের রোগ। এ রোগটি কিভাবে ছড়িয়ে থাকে তা নিচে উল্লেখ করা হলো ঃ

  • আক্রান্ত প্রাণীর একই স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার ফলে এর রোগটি ছড়াতে পারে।
  • আক্রান্ত পশুর লালা দুধ বা আক্রান্ত প্রাণীর সংস্পর্শে যেকোনো কিছুর মাধ্যমে এর ছড়াতে পারে
  • আক্রান্ত প্রাণীর কোন কিছু বস্তু সামগ্রী দ্বারা এর একটি ছড়াতে পারে
  • মশা মাছি আঠালি এর মাধ্যমে খুবই দ্রুতভাবে ছড়াতে পারে
  • প্রাণীর পরিবহনের মাধ্যমে ছড়াতে পারে
  • পশুর কোন ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ছোঁয়াচের মাধ্যমে ছড়াতে পারে
উপরে উল্লেখিত কারণগুলো ছাড়া আরো বিভিন্ন কারণে রোগটি একই স্থান থেকে অন্য স্থানে খুবই দ্রুত ভাবে ছড়াতে পারে। যদি এ রোগটি আমাদের পশুর মধ্যে হয়ে থাকে তার উপরে উল্লেখিত কারণগুলো মেনে চলতে হবে।

লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের প্রতিকার

আক্রান্ত প্রাণী সুস্থ হওয়ার পর তার শরীর থেকে রক্ত নিয়ে প্রতি ১০০ বা তার বেশি কেজি ওজনের জন্য ১০ শিশি ও সুস্থ গরুর মাংসের সাত দিন পর পর তিনবার প্রয়োগ করলে এ রোগটি প্রতিরোধ হয়ে থাকে। পক্স বা সিপ পক্স ভ্যাকসিন প্রাণীর ওজন করে তিনগুণ বেশি হারে দেওয়া।

লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের চিকিৎসা

যদি কোন গবাদী প্রাণী লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে সে প্রাণীর কি কি চিকিৎসা প্রয়োজন বা কি কি চিকিৎসা করা উচিত তার নিচে তুলে ধরা হলো ঃ

  • এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ যার ফলে এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো যাবে না।
  • এন্টিবায়োটিক খাওয়ালে প্রাণী দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
  • ১০০ কেজি ওজনের প্রাণীর জন্য প্যারাসিটামল ট্যাবলেট দুইটি করে খাওয়াতে হবে
  • খাবার সোডা ৫০ গ্রাম নিম পাতা বাটা ২৫ গ্রাম লবণ ২৫ গ্রাম গুড় ৫০ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে একত্র মিশিয়ে সকাল বিকাল ৭ দিন খাওয়াতে হবে।
  • গবাদি পশুর স্থানগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  • ডক্টরের পরামর্শ নিতে হবে।
  • আক্রান্ত পশুকে আলাদা স্থানে রাখতে হবে।
  • এ রোগের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে
উপরে উল্লেখিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার যদি মেনে চলা যায় তাহলে আক্রান্ত পশুকে দ্রুত এ ভাইরাসজনিত রোগ থেকে উপশম এবং রেহাই পাওয়া সম্ভব।

লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের পরামর্শ

এ রোগটি হলে কি কি পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং কি কাজ করা উচিত তা নিচে উল্লেখ করা হলো ঃ

  • খামার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা
  • স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা
  • খামারে জীবন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
  • কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করা
  • মশামাছি নিয়ন্ত্রণ করা
  • খামারে আক্রান্ত প্রাণীর মশারি ব্যবহার করা
  • আক্রান্ত প্রাণী দ্রুত অন্যস্থানে  সড়িয়ে ফেলা
  • চিকিৎসার ব্যবস্থা করা
  • আক্রান্ত অঞ্চল পশুর চলাচলের জন্য নিয়ন্ত্রণ করা
  • আক্রান্ত প্রাণীর প্রয়োজনীয় আয়োডিন পটাশিয়াম দ্বারা পরিষ্কার করা।
যদি আপনার কোন গবাদি পশুর এ রোগটি হয়ে থাকে তাহলে উপরে উল্লেখিত পরামর্শ গুলো মেনে কাজ করলে এ রোগ থেকে উপশম পাওয়া সম্ভব।

শেষ কথা ঃ লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার

প্রিয় পাঠক আপনি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন যে আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলের ভিতর আলোচনা করার চেষ্টা করলাম লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার ও ইত্যাদি সম্পর্কিত সকল তথ্য।

আজকের আমাদের লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ চিকিৎসা ও প্রতিকার এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে কেমন লাগলো আপনার মূল্যবান মতামতটি জানিয়ে দিন আমাদের কমেন্ট বক্সে। আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন সবার কাছে। আজকের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

লার্নিং পয়েন্ট ২৪ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url